সোনারগাঁ জার্নাল:
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অসুস্থ রাজনীতি করতে করতে ফখরুল সাহেবরা অসুস্থ হয়ে গেছেন। আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে মীর্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এটি কি রাজনৈতিক অসুস্থতা নয়। ক্ষমতায় থাকতে সব লুটেপুটে খেয়েছে। এখনো ঐ খাই খাই ভাব। তিনি বলেন, সহিংস আন্দোলনের ক্ষেত্রে জনগনের নিরাপত্তার জন্য সরকারের দায়িত্ব আছে সতর্ক অবস্থানে থাকার। ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগের দায়িত্ব আছে জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার। আমরা বিএনপির সাথে পাল্টাপাল্টি করছি না। আমরা শান্তি সমাবেশ করবো। তারা উস্কানি দিচ্ছে সংঘাতের, সহিংসতার, ভাংচুরের। তারা পুলিশের উপর হামলা করার জন্য নিত্য দিনই চেষ্টা চালাচ্ছে। এর সমুচিত জবাব আমাদের দিতেই হবে। এখানে পাল্টাপাল্টির কোন বিষয় নেই।
১৮ জানুয়ারী বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত মাসব্যাপী লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি উষ্কানি দিয়ে সহিংসতা করতে চাচ্ছে। কারন ইলেকশন হলে বিএনপি ভোটে হেরে যাবেন। শেখ হাসিনার সাথে ভোটে পারবেন না। আন্দোলনের কোন শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ তারা আজ পর্যন্ত নেন নি। আমরা কোন উস্কানি দেব না। তারা উস্কানিমূলক কর্মকান্ড বন্ধ না করলে দেশের জনগন তাদের প্রতিরোধ করবে।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নিজেরা কিছু করতে পারেনি। শেখ হাসিনা যা করছে তাতে তাদের অন্তরে জ্বালা তৈরি হয়েছে। তারা রাতের অন্ধকারে ভিত্তি প্রস্তর ভেঙ্গে দিচ্ছে। শেখ হাসিনা যে শতসেতু উদ্বোধন করেছেন সেই সেতুর উদ্বোধনী ফলক নরসিংদীতে ভাংচুর করে নিচে ফেলে দিয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে আগ্রহি নয়। আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা শান্তি চাই। কোন বিশেষ দিন নয় প্রতিদিনই আমরা সর্তক অবস্থানে আছি এবং থাকবো।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনের নামে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত যারাই দেশের জনগনের জানমালের নিরাপত্তা বিঘিœত করবে, বাসে গাড়িতে আগুন সন্ত্রাস করবে, ভাংচুর করবে তাদের এ অপকর্মের সমুচিত জবাব দেয়া হবে। স্বাধীনতার প্রশ্নে কোন আপোষ নেই, মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোন আপোষ নেই। অসম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রশ্নে কোন আপোষ নেই। যারাই এর বিরুদ্ধে দাড়াঁবে আমরা ব্যবস্থা নেব।
লোকজ উৎসব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের লোক শিল্প অর্থনৈতিক ভাবে অনেক লাভজনক হতে পারে। আমাদের জামদানী শিল্পকে আরো গতিশীল করতে হবে। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে হবে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের স্মৃতি যেন ইট পাথরের খাঁচায় বন্দি না হয়। এখানে যাতে আর কোন স্থাপনা তৈরি না হয়। এত বাহুল্যের প্রয়োজন নেই। আমি লালন শাহের আখড়াকে ইট পাথরের খাঁচায় বন্দি করেছি। এখন মনে হয় এটা আমার ভুল ছিল। লালনকে ইট পাথরে বাঁধা উচিত হয়নি। মাটির ঘরেই লালনের আখড়া মানায়।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চিত্র শিল্পী হাশেম খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সাংসদ সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সচিব আবুল মনসুর, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট শামসুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদল ও জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমূখ।
বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোক সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবনের লক্ষে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত লোকজ উৎসব এ বছর মোট ১০০টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোক কারুশিল্পীদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। তারা এখানে কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন। এছাড়া রয়েছে লোকজীবন প্রদর্শনী, নকশি কাথা প্রদর্শনী, কারুশিল্পীদের চিত্রকর্ম প্রদশর্নীসহ লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন লোকজ অনুষ্ঠানের আয়োজন। এ উৎসব চলবে আগামী ১৬ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ উৎসব স্থল খোলা থাকবে।
Leave a Reply