সোনারগাঁ জার্নাল
জ্বলন্ত চুলায় লাকড়ি দিয়ে চার-পাঁচটি মাটির খোলায় ভাপা ও চিতই পিঠা বানাচ্ছেন মোঃ কামাল ভূইয়া। চুলার অল্প আঁচে উড়ছে ধোঁয়া।
সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন ফুটপাতের ওলি-গলিতে জমে উঠেছে ভাপা ও চিতাই পিঠা বিক্রি। শীতের দিনে সকাল-সন্ধ্যাই ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রির দোকান গুলোতে পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা কাঁচা-বাজারের সামনে ও বিভিন্ন ওলি-গলিতে রাস্তার ফুটপাতে ও মোড়ে মোড়ে চলছে ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম। ভাপা পিঠার পাশাপাশি বিক্রি করছে চিতই পিঠাও। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরই জমে উঠে এসব পিঠা বিক্রির কাজ। বেশির ভাগ দোকানেই পিঠা বিক্রি করছেন নিম্নবিত্ত পরিবারের পুরুষ, নারী ও ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা।
পিঠা বিক্রেতা নাছিমা বেগম বলেন, অবসর সময় বাড়তি আয়ের জন্য বিকাল বেলা পিঠা বানানো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরি। নতুন চালের গুড়ো ও নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে খুব যতœ সহকারে তৈরী করা হয় ক্রেতাদের জন্য ভাপা পিঠা। পিঠাকে আরো সুস্বাদু করার জন্য নারকেল ও গুড় ব্যবহার করা হয়। ভাপা পিঠা ছাড়াও ক্রেতাদের জন্য চিতই পিঠা তৈরী করা হয়। এসব পিঠা প্রতি পিচ ভাপা পিঠা ১০ ও চিতই পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫কেজি পরিমাণ চালের পিঠা বিক্রি হয়। শীতের চিতই পিঠার সঙ্গে বাড়তি হিসেবে মরিচ, সরিষা, সুটকি ও ধনে পাতার ভর্তা ফ্রি দেওয়া হয়।
পিঠা তৈরির বিষয় জানতে চাইলে মুক্তার হোসেন বলেন, পিঠা তৈরীর একটি পাতিল ও ঢাকনা ব্যবহার করা হয়। জলন্ত চুলার উপর পাতিলে পানি দিয়ে ঢাকনার মাঝ খানটা ছিদ্র করে পাত্রের মুখে দিতে হয়। এ সময় ঢাকনার চার পাশে আটা, চালের গুড়া ও কাপড় দিয়ে শক্ত করে মুড়ে দেওয়া হয়। যাতে করে গরম পানির ভাব বের হতে না পারে। পরে ছোট একটি গোল পাত্রের মধ্যে চালের গুড়া, নারিকেল ও গুড় মিশিয়ে পাতলা কাপড়ের আবরনে ঢাকনার মুখে রাখা হয়। পানির গরম তাপে নিমিষেই সিদ্ধ হয়ে যায় নতুন চালের ভাপা পিঠা।
কাঁচপুর ইউনিয়নের উত্তর পাড়া গ্রামের নুরুউদ্দিন বেপারী পিঠা খেতে খেতে বলেন, সব ধরনের ক্রেতাদের দেখা যায় এখানে পিঠা খেতে আসে। আবার কেউ কেউ বাড়িতে ছেলে মেয়েদের জন্য ও পিঠা কিনে নিয়ে যায়। ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে পিঠা খাওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। তাই এখানে সেই স্বাদ নেয়ার চেষ্টা করছি।
পিঠা বিক্রেতা আবুল হোসেন জানান, শীত আসতেই দোকানে কাজের চাপ অনেক। পিঠা বানানো থেকে সব কিছু করতে হয়। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পার হয়। আমি ৭টি চুলায় পিঠা তৈরী করি। বর্তমানে প্রতিদিন ১০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করি। প্রতি দিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে পিঠা বানানো ও বিক্রি।
Leave a Reply